,

বাহুবলে দুইপক্ষের সংঘর্ষে দুইজন নিহতের ঘটনায় আটক ৬ :: আহত মকসুদকে ঢাকা পুঙ্গ হাসপাতালে প্রেরণ

জুবায়ের আহমেদ, বাহুবল : বাহুবলে দুইপক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুইজন নিহতের ঘটনায় ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গুরুতর আহত মকসুদ মিয়াকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা পুঙ্গ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ২ অক্টোবর সকালে সিলেট ওসমানী হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গত শনিবার ৩০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামে ইউসুফ আলী ও ফারুক মিয়ার লোকজনের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে ইউসুফ আলী (৩৫) ও উস্তার মিয়া (৩৭) নিহত হয়। গত রবিবার ১ অক্টোবর ময়নাতদন্ত শেষে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তাদের মরদেহ বাড়িতে এনে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন প্রতিবেশীরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাহুবল উপজেলার ৬নং মিরপুর ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের মকসুদ মিয়া ও ফারুক মিয়ার সাথে একই গ্রামের চেরাগ আলীর ছেলে ইউসুফ আলী ও সুজন আহমেদ লিয়াকতের পানি নিষ্কাশনের রাস্তা ও জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিলো। এ বিরোধের জের ধরে দুইপক্ষের মাঝে কয়েক দফা মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় মকসুদ মিয়া দাবী হয়ে ইউসুফ আলী ও সুজন আহমেদ লিয়াকতসহ কয়েকজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসেন সুজন আহমেদ লিয়াকত ও ইউসুফ আলীসহ তাদের লোকজন। প্রতিপক্ষের অভিযোগ তারা জামিনে আসার পর গত সপ্তাহে আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায়।
ওই ঘটনার জের ধরে গত শনিবার ৩০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে হঠাৎ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুইপক্ষ। ঘন্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে মকসুদ মিয়া (৪৯) উস্তার মিয়া (৩৭) আব্দুল মালেক (২৭) ইউসুফ আলী (৩৫) হোছন আলী (৬০) লিয়াকতসহ প্রায় ১২ জন আহত হয়। এসময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় মকসুদ মিয়া, ইউসুফ আলী, উস্তার মিয়া, আব্দুল মালেক ও হোছন আলীসহ কয়েকজনকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল ও বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ইউসুফ আলী (৩৫) ও উস্তার মিয়া(৩৭) মারা যান।
তাদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে কামারগাঁও গ্রামে ইউসুফ আলীর বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। পরে শায়েস্তাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে তাদের অনেক প্রচেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে।
খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন হবিগঞ্জ, ১ বাহুবল-নবীগঞ্জ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ মিলাদ এমপি, হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ ঘটনায় জ্ঞিাসাবাদের জন্য ৬ জনকে আটক করা হয়েছে।
বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মশিউর রহমান সোমবার বিকাল প্রতিনিধিকে জানান, জোড়া খুনের ঘটনায় কোন মামলা হয়নি। এ পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত সন্ধেহে ৬ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন- মিরপুর ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের মৃত হরমত উল্লাহ পুত্র মোঃ আতর আলী (৬০), আবুল মিয়ার পুত্র মোঃ সোহাগ মিয়া (২০), মকছুদ আলীর পুত্র সাজু মিয়া (১৯), সানু মিয়ার পুত্র মোঃ মোবাশ্বির (১৯) ও মানিক মিয়ার পুত্র অলিউর রহমান (১৯) এবং সাতকাপন ইউনিয়নের মানিকপুর গ্রামের আব্দুল আউয়াল এর পুত্র মোঃ রানা (৩০)।
নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেলের এএসপি আবুল খয়ের বলেন, এ ঘটনায় এজহার নিয়ে কেউ আসেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ওই গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর